দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ঘো...
দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন। |
সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ঘোষিত দু'মাসের সাধারণ ক্ষমা কার্যক্রম ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে, যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জরিমানা ছাড়াই বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। যারা এই সুযোগ নিয়ে বৈধ হতে চান অথবা দেশে ফিরে যেতে চান, তাদের করণীয় সম্পর্কে গত বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দুবাই ও উত্তর আমিরাতের বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন। সেখানে কনস্যুলেটের প্রথম প্রেস সচিব মোহাম্মদ আরিফুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন জানান, এই সুবিধা পেতে দুবাইয়ের ভিসাধারীদের আল-আবির ইমিগ্রেশনে এবং আমিরাতের অন্যান্য অঞ্চলের ভিসাধারীদের সংশ্লিষ্ট প্রদেশের অভিবাসন কেন্দ্রে যেতে হবে। এছাড়া, আমিরাত সরকার অনুমোদিত টাইপিং সেন্টার, তাসহিল, বা আমের সেন্টারে যেতে হবে।
দেশে ফেরার জন্য এক্সিট পারমিট পেতে মূল পাসপোর্ট এবং দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে ট্রাভেল পারমিট নিতে হবে। সাধারণ ক্ষমা চলাকালে ভিসাবিহীন থাকার জন্য কাউকে জরিমানা দিতে হবে না, তবে ডকুমেন্ট প্রসেসিং-এর জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবৈধভাবে প্রবেশ করা ব্যক্তিরা পাসপোর্ট, বাংলাদেশি পরিচয়, কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসার প্রমাণসহ আগের ভিসার তথ্য দিয়ে কনস্যুলেট বা দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পারমিট সংগ্রহ করতে পারবেন। এই পারমিটের মাধ্যমে তারা সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে গিয়ে এক্সিট পারমিট নিতে পারবেন।
ভিসা নিয়মিতকরণ অথবা দেশে ফেরার ক্ষেত্রে এক্সিট পারমিটের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। এক্সিট পারমিটের মেয়াদ হবে ১৪ দিন, যা বায়োমেট্রিক্স স্ক্যানিংয়ের পর ইস্যু করা হবে।
যদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ভিসা রেকর্ডে দেখা যায় যে কেউ পলাতক বা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে পলাতক (তা’মিম) হিসেবে চিহ্নিত, তবে দেশে ফেরার জন্য এক্সিট পারমিট বা ভিসা নিয়মিত করার আগে পুলিশের ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে। তবে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে এক্সিট পারমিট নিয়ে দেশে গেলে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না। এ সুবিধা পেতে আদালত থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।
যাদের বিরুদ্ধে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে, তারা সাধারণ ক্ষমার আওতায় আবেদন করতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নে কনসাল জেনারেল বলেন, এটি মামলার প্রকারের ওপর নির্ভর করবে। এ ক্ষেত্রে পলাতক বা তা’মিম রিপোর্ট আপডেট করে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ দেশে ফেরার জন্য এক্সিট পারমিট ইস্যু করবে।
কোনো আবেদনকারী কীভাবে তার পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করতে পারেন, যা স্পন্সর কর্তৃক ইমিগ্রেশনে জমা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে তিনি জানান, আবেদনকারী যদি সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে যোগাযোগ করেন, তবে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে পাসপোর্ট প্রদান করবে। কিছু পাসপোর্ট ইতোমধ্যে কনস্যুলেট বা দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে, যা সরাসরি সেখান থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
জরিমানা মওকুফ ও ভিসা নিয়মিতকরণের পর কি সরাসরি কর্মসংস্থান ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে কিনা, এই প্রশ্নে কনসাল জেনারেল জানান, সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট ও ভিসা বা পরিচয়পত্র দাখিল করে প্রসেসিং ফি প্রদান করলে জরিমানা মওকুফ করা হবে এবং ছয় মাসের জন্য জব সিকার্স ভিসা ইস্যু করা হবে। তবে আমিরাতে বর্তমানে সাধারণ ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না।
সাধারণ ক্ষমার সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে, তিনি উল্লেখ করেন, সাধারণ ক্ষমার সময়কালে নতুন ভিসা দেয়া সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। যারা অনিয়মিত/অবৈধভাবে বসবাস করছেন এবং যাদের ভিসার মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, তারা সাধারণ ক্ষমার আওতায় বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া, যারা ভিজিট ভিসায় এসেছেন, তারাও সাধারণ ক্ষমার সময় বৈধতার সুযোগ নিতে পারবেন।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই থেকে প্রবাসীদের প্রতারণা থেকে বাঁচাতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কনস্যুলেট।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়কালে কনস্যুলেটের বাইরে দালাল বা প্রতারকচক্র সক্রিয় থাকতে পারে, তাই কনস্যুলেটে আগত প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুধুমাত্র কনস্যুলেটের অভ্যন্তরে থাকা কাউন্টারগুলো থেকে সেবা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
কনস্যুলেটের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন যেন কনস্যুলেটের বাইরে বা অভ্যন্তরীণ কাউন্টারের বাইরে না করা হয়। যদি কেউ বাইরে আর্থিক লেনদেন করে প্রতারিত হন, তবে তার পুরো দায়ভার ওই ব্যক্তির নিজের। এ ক্ষেত্রে কনস্যুলেট কোনো দায়িত্ব নেবে না।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"