ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আপনা...
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আপনাকে দ্রুত ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, নাহলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মিস করতে পারেন।” তিনি উল্লেখ করেন যে, ঢাকার একটি বড় অংশ এখন বিশ্বের গ্রাফিতি রাজধানীতে পরিণত হয়েছে, যেখানে তরুণ শিক্ষার্থী ও শিশুদের (বয়স ১২ থেকে ১৩ বছর) উদ্যোগে ৪০০ বছরের পুরোনো শহরের দেয়ালে নতুন গণতান্ত্রিক ও পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশের চিত্র ফুটে উঠেছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে ভার্চুয়াল সংযোগে ড. ইউনূস এই মন্তব্য করেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, ফিজি, ওমান এবং ভিয়েতনামের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদেরও বাংলাদেশ সফরের জন্য দ্রুত আমন্ত্রণ জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “এই উদ্যোগের পেছনে কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা বা দিকনির্দেশনা নেই, এমনকি কোনো বাজেট সহায়তাও পাওয়া যায়নি। এটি দ্বিতীয় বিপ্লবের লক্ষ্যে তরুণ প্রজন্মের আবেগ ও অঙ্গীকারের প্রকাশ মাত্র। তারা নিজেরাই রং এবং ব্রাশ কিনে নিজেদের বার্তা ও স্বপ্ন আঁকছে। তাদের বার্তা যে কাউকে শিহরিত করবে। তরুণদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা আমাদের দায়িত্ব।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, "আমাদের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ, এবং তারা সমাজের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ। তারা আলাদা মানসিকতার এবং একটি নতুন বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার করেছে। বর্তমান প্রজন্ম আগের প্রজন্মের তুলনায় প্রযুক্তিগতভাবে অনেক বেশি অগ্রসর ও সক্ষম।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "তরুণরা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। তারা উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠছে। তারা চাকরি চায় না, বরং তাদের বাধ্য হয়ে চাকরি করতে হয়, কারণ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা তাদের শুধু চাকরির জন্যই প্রস্তুত করে রেখেছে, উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য নয়।
পরিবেশগত ও সামাজিক সমস্যার সমাধানে গ্লোবাল সাউথের নেতাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, "বয়স বাড়ার মানে এই নয় যে, আপনাকে কর্মজীবন থেকে অবসর নিতে হবে। সৃজনশীলতা কখনও থেমে থাকে না—এটি চলতে থাকে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমরা একসঙ্গে কাজ করে দেখতে পারি, কীভাবে সমাজকে এমনভাবে গড়ে তোলা যায়, যেখানে প্রতিটি মানুষের সৃজনশীলতা বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্তে কাজে লাগানো যায়।
তিনি আরও বলেন, "১৯৫২ সালে মাতৃভাষার জন্য বাংলাদেশি ছাত্ররা জীবন উৎসর্গ করেছিল, যা সারা বিশ্বে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য সংগ্রামের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। প্রায় সাত দশক পর, আমাদের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় বিপ্লব এখন গ্লোবাল সাউথের তরুণদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মর্যাদা, সমতা এবং অংশীদারিত্বমূলক সমৃদ্ধির জন্য কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে উদ্বুদ্ধ করছে। একজন প্রবীণ তরুণ হিসেবে আমি এই বিপ্লবে অংশ নিতে এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত। তাদের সর্বাত্মক সাফল্যের জন্য আমাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"