সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও চাল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখনও স্থিতিশীল নয়, যা ক্রেতাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছ...
সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও চাল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখনও স্থিতিশীল নয়, যা ক্রেতাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মিল এবং পাইকারি পর্যায়ে সঠিক তদারকি করা গেলে দাম কমতে পারে।
গত জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে চালের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়, যা এখনও কমেনি। বৃহস্পতিবার ঢাকার খুচরা বাজারে মোটা চাল, যেমন স্বর্ণা ও চায়না ইরি প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চাল (বিআর-২৮ ও পাইজাম) ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় এবং সরু বা মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মুক্তা রাইস এজেন্সির মালিক শাহজাহান মিয়া বলেন, 'পরিবহন ব্যবস্থা এখন স্বাভাবিক রয়েছে, পণ্য আনা-নেওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। তবু মিলাররা চালের দাম বাড়াচ্ছে। যদি সরকার মিলগুলোর কার্যক্রম তদারকি করে, তাহলে দাম কমতে পারে।'
অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহ ধরে সবজির বাজারে দামে কিছুটা কমতি দেখা যাচ্ছে। পেঁপে এখন ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা ১৫-২০ দিন আগে ছিল ৭০ টাকা। পটোল, ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে সপ্তাহ দুই আগে এই সবজি ৭০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। এছাড়া বরবটি, বেগুন ও শসা বর্তমানে ৭০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে, যা আগে ১৫০ টাকা ছিল। তবে, কাঁচামরিচের দাম কোথাও ২০০ টাকা আবার কোথাও ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলুর দাম সামান্য কমেছে। বর্তমানে খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করছেন, যদিও পাড়া-মহল্লায় এর দাম কিছুটা বেশি। মাসখানেক আগে আলুর কেজি ছিল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। রাজধানীর তেজকুনিপাড়ার সবজি ব্যবসায়ী মাহবুব আলমের মতে, পাইকারি বাজারে সবজির দাম কমে যাওয়ার ফলে খুচরা বিক্রেতারাও দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন।
বাজারে পাকিস্তানি পেঁয়াজও দেখা যাচ্ছে, যা প্রতি কেজি ৯২ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়, যেখানে সপ্তাহ দুয়েক আগে এর দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর আলু ও পেঁয়াজের দাম বেশি।
ডিমের দাম ডজনে ১৭০ টাকা থেকে নেমে ১৪৫ টাকায় এসেছিল, তবে গতকাল তা আবার ৫ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় উঠেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ব্রয়লার মুরগির দামও কমে ১৬০ টাকা হয়েছিল, তবে এখন তা ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বেড়েছে। অন্যদিকে, সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায় এসেছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা।
গরুর মাংসের দাম এতদিন ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি ছিল, কিন্তু সম্প্রতি কিছু জায়গায় তা ৭৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে বেশিরভাগ জায়গায় এখনও ৭৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
ইলিশের মৌসুম হলেও দাম খুব একটা কমেনি। এক কেজি ওজনের ইলিশ কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার টাকা, আর আধা কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে বেসরকারি চাকরিজীবী সায়েদুল হক বলেন, "চালের দাম কমানো এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি, কারণ ভাতের কোনো বিকল্প নেই।" তিনি সবজির মতো চালের বাজারও তদারকির দাবি জানান।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"