Page Nav

HIDE

Breaking News:

latest

বিক্ষোভের দমন-পীড়নে ১শ’ ৫০ জনেরও বেশি ছাত্র নিহত, তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

  জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভে সরকারের সহিংস দমন-পীড়নের উপর একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানোর পর, বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প...

 

বিক্ষোভের দমন-পীড়নে ১শ’ ৫০ জনেরও বেশি ছাত্র নিহত, তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের


জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভে সরকারের সহিংস দমন-পীড়নের উপর একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানোর পর, বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত সরকারের পক্ষ থেকে সাফাই গেয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, "প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র জনগণকে রক্ষা করছেন।


বৃহস্পতিবার আল জাজিরার সাথে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ আরাফাত বলেন, দেশের নিরাপত্তা বাহিনী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যই কাজ করেছে। তিনি ‘চরমপন্থী ও সন্ত্রাসবাদী’ সহ তৃতীয় পক্ষকে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছেন।


আরাফাত বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বা নৈরাজ্যবাদী হিসেবে অভিহিত করছি না। এটা তৃতীয় পক্ষ, যারা এই আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে এসব করছে। আমরা উত্তেজনা কমানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। কিছু লোক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে যাতে তারা সুবিধা নিতে পারে এবং সরকারের পতন ঘটাতে পারে।


১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ সরকারি চাকরি বরাদ্দের কোটা সংস্কারের দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী এই মাসের শুরুতে রাস্তায় নেমে আসে। স্থানীয় গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, দমন-পীড়নের ফলে ১৫০ জনেরও বেশি ছাত্র নিহত এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছে।


অভিযোগ উঠেছে যে, ১৫ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানোর পর বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। পুলিশ তখন বিক্ষোভ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেয় এবং কারফিউ জারি করে।


বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, ছাত্রদের হল ত্যাগ করতে বলা হয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, এবং দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা স্থগিত করা হয়। বিক্ষোভ দমনে এই কঠোর পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে ফেলে।


বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভল্কার তুর্ক সরকারের দমন-পীড়নের সময় ঘটে যাওয়া কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমরা জানতে পেরেছি যে অনেক মানুষ সরকারি দলের সাথে সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলির সহিংস আক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং তাদের সুরক্ষায় কোনও প্রচেষ্টা নেওয়া হয়নি।


জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ দল পৃথক একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশের সরকারের প্রতিক্রিয়াকে 'বিক্ষোভকারীদের উপর সহিংস দমন-পীড়ন' হিসেবে আখ্যা দিয়ে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক আইরিন খান বৃহস্পতিবার আল জাজিরাকে বলেন, "সরকার অন্যদের দোষ দিচ্ছে, অন্যরা সরকারকে দোষ দিচ্ছে; আমাদের পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।


আইরিন খান আরও বলেন, "সরকারের ওপর আস্থা না থাকায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি জাতিসংঘকে এই ধরনের তদন্ত করার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে যাতে কী ভুল হয়েছে তা খুঁজে বের করা যায়, দায় স্বীকার করা যায় এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করা যায়।


তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আরাফাত তার সাক্ষাৎকারে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সদর দপ্তরে হামলার জন্য বিক্ষোভকারীদের নিন্দা জানিয়ে বলেন, "ভবনটির পাহারাদার পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল, তবে তাদের গুলি চালানোর অনুমতি না থাকায় দুর্বৃত্তরা বিটিভির ভেতরে ঢুকে আক্ষরিক অর্থে তাণ্ডব চালায়, আগুন ধরায় এবং সম্পদ ভাঙচুর ও ধ্বংস করে।"


মঙ্গলবার, বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলন শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, শিক্ষার্থীদের হত্যার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এছাড়া, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মন্ত্রিসভা ও দল থেকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।


সূত্র: আল জাজিরা






সবার আগে পেতে Follow করুন:

" আঁধার আলো নিউজ গুগল নিউজ"

" আঁধার আলো নিউজ টুইটার "

" আঁধার আলো নিউজ ফেসবুক

"আঁধার আলো নিউজ পিন্টারেস্ট ;

" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"

" আঁধার আলো নিউজ লিংকডইন "