ভারতে শকুনের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় মানুষের মৃত্যুহার বেড়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বিবেচিত এই পাখির অনুপস্থিতিত...
ভারতে শকুনের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় মানুষের মৃত্যুহার বেড়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বিবেচিত এই পাখির অনুপস্থিতিতে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ছড়িয়ে ২০০০-২০০৫ সালের মধ্যে অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছে। তাই, গবেষকরা শকুন সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই গবেষণা আমেরিকান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, শকুন কমে যাওয়ায় মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সহজেই ঘটছে, যা অতিরিক্ত পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে।
একসময় ভারতে শকুনের সংখ্যা ছিল ৫০ মিলিয়ন, কিন্তু ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে এ সংখ্যা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এর প্রধান কারণ ছিল গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ডাইক্লোফেনাক নামক ব্যথানাশক ওষুধ, যা শকুনের জন্য প্রাণনাশক প্রমাণিত হয়। এই ওষুধ খাওয়ানো গবাদিপশুর মৃতদেহ খেয়ে শকুনের কিডনি নষ্ট হয়ে যায় এবং অনেক শকুন মারা যায়।
স্টেট অব ইন্ডিয়াস-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সালে গবাদিপশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, ফলে কিছু এলাকায় শকুনের মৃত্যু কমে আসে। তবে, শকুনের তিনটি প্রজাতি (সাদা শকুন, ভারতীয় শকুন, লাল মাথার শকুন) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের সংখ্যা ৯১ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। শকুন কমে যাওয়ায় ভারতে মানুষের মৃত্যুহার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের যেসব জেলায় শকুনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমেছে, সেসব জেলায় মানুষের মৃত্যুহারও চার শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া, যেসব শহরে মৃত গবাদিপশু ভাগাড়ে ফেলা হতো, সেখানে মানুষের মৃত্যুহারও বেশি।
গবেষকদের ধারণা, শকুনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পাঁচ বছরে (২০০০-২০০৫ সাল) রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় প্রতি বছর অতিরিক্ত এক লাখ মানুষ মারা গেছে। গবেষণার সহলেখক, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর হ্যারিস স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক আইয়াল ফ্র্যাঙ্ক বলেন, শকুন পরিবেশ থেকে ব্যাকটেরিয়া ও রোগ-জীবাণুযুক্ত মৃত প্রাণী অপসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই, এদের প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলা হয়। তাদের অনুপস্থিতিতে রোগব্যাধি ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"