গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামে অবস্থিত সাভানা ইকো রিসোর্ট, যেটি একটি প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই পর...
গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামে অবস্থিত সাভানা ইকো রিসোর্ট, যেটি একটি প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই পর্যটনকেন্দ্রে এক রাত বিতরণের জন্য অন্তত ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। রিসোর্টের মধ্যে দেখা গেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অপূর্ব আভিজাত্যের মিশেল। রিসোর্টের ১৫টি পুকুরের চারপাশে গার্ড ওয়াল, দৃষ্টিনন্দন ঘাট, পানির কৃত্রিম ঝরনা এবং আলোর ঝলকানি দেখতে পাওয়া যায়।
একাধিক সুখবর আছে বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স কটেজের মাঝে। এই কটেজগুলি বিদেশি শিল্পীদের হাতে নির্মিত, এবং স্থাপত্য নকশায় অবদান রয়েছে এই বিদেশি শিল্পীদের। কটেজের ভেতর থেকে পুকুরের দিকে একটি পথ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে মাটি সংস্পর্শ করা প্রয়োজন নেই; কটেজ থেকে কাচে ঘেরা আবরণ পার করে পৌঁছে যেতে পারে একটি সুন্দর ঘাটে। সাভানা ইকো রিসোর্টের পরিধি এতটাই বড় যে গুগলে সার্চ দিলে এই রিসোর্টটি সাহাপুর গ্রামের নাম দিয়ে প্রথমেই চলে আসে।
এই ইকো রিসোর্টের প্রায় এক হাজার ৪০০ বিঘা জমির উপর মাটি ভরাট করে কৃত্রিম পাহাড় নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সাগরের কৃত্রিম ঢেউ সুইমিং পুল আছে এবং অনেকগুলি ভিয়েতনামি নারকেলগাছ এবং ফলফলাদির গাছ রয়েছে। বিশাল আকৃতির কনসার্ট হলের সাথে উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম অন্য এক বৈশিষ্ট্য যোগ করেছে।
বিভিন্ন কটেজ সংক্রান্ত সকল খরচ একেকটি পরিবারের জন্য আলাদা আলাদা দেওয়া হয়েছে, যা মোট অর্ধ কোটি টাকার ওপর। জুগলদের চাহিদা বাড়ানোর কারণে রিসোর্টে আরও ৫০টি কটেজ নির্মাণ করা হয়েছে। রিসোর্টের নিরাপত্তা সংরক্ষণের জন্য বিশেষ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে এবং যাতায়াতের জন্য সরকারি খরচে সাত কিলোমিটারের বেশি পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
এই অদ্বিতীয় পর্যটন স্পটের মালিকপক্ষ কে সেটা কি জানেন? না নিশ্চয় জানা হয়নি? এই প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষে আছে বেনজীর আহমেদের পরিবারের সদস্যরা।
সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বেনজীরের বড় মেয়ে ফারহিন রিসতা বিনতে বেনজীর এবং পরিচালক ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর।
পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা এবং তাঁর পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন সম্পত্তির পরিমাণ অনেক উল্লেখযোগ্য। এরা অনেকগুলি কোম্পানির মালিক হয়েছেন এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্তত পাঁচটি কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে, যেখানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা ছেড়ে আরো বেশি।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেনজীর আহমেদের অনেক সম্পত্তি রয়েছে। এদের অন্তত ৬টি কোম্পানির মালিকানা রয়েছে বিভিন্ন জেলা গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল এলাকায় এবং এখানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি।
বেনজীর আহমেদ তার চলমান জীবনে বেতন-ভাতা থেকে অনেক টাকা উপার্জন করেছেন। তাঁর কাছে আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা অনেক। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের ৩০তম মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ মেডেল (বিপিএম) তিনি ২০১১, ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৬ সালে পেয়েছেন। তিনি শুদ্ধাচার পুরস্কার অথবা রাষ্ট্রীয় শুদ্ধাচার পুরস্কারও পেয়েছেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে অবসরে যাওয়ার পর থেকে এই পুলিশকর্তার থলের বিড়াল হিসেবে ফিরে আসে।
সম্পদের মালিকানায় স্ত্রী ও দুই মেয়ে:
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, বেনজীর আহমেদ নিজের নামে কোনো সম্পদ করেননি, তাঁর স্ত্রী এবং দুই মেয়ের নামে করেছেন। গোপালগঞ্জে সাভানা ফার্ম প্রডাক্টস, সাভানা অ্যাগ্রো লিমিটেড, সাভানা ন্যাচারাল পার্ক, সাভানা ইকো রিসোর্ট, এবং সাভানা কান্ট্রি ক্লাব এই কোম্পানিগুলি তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তারা বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড নামের একটি কম্পানিতে বড় মেয়ে ফারহিন রিসতা বিনতে এক লাখ শেয়ার নিয়েছেন, এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে আরো এক লাখ শেয়ার কেনা হয়েছে। ম/এস একটি ফার্মে বড় মেয়ের নামে ৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে, এবং ছোট মেয়ের জন্য আরো ৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানে বেনজীরের স্ত্রী জীশান মীর্জার অংশ আছে ১৫ শতাংশে। অর্থাৎ মোটে বেনজীর আহমেদের স্ত্রী এবং মেয়েদের নামে প্রতিষ্ঠানে মালিকানার ২৫ শতাংশ রয়েছে।
একটি নথি থেকে যে তথ্যগুলি প্রাপ্ত হয়েছে, সেগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, সাবেক পুলিশ এবং র্যাব কর্তা বেনজীর আহমেদ তাঁর স্ত্রী এবং দুই মেয়ের নামে গোপালগঞ্জে সাভানা অ্যাগ্রো প্রতিষ্ঠা করেছেন। সাভানা অ্যাগ্রো লিমিটেডে মূলধারী সদস্য ৩ জন। চেয়ারম্যান হিসেবে বড় মেয়ে ফারহিন রিসতা বিনতে এবং এমডি হিসেবে তাঁর পরিচালক ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর আছেন। তাহসিন রাইসার বয়স ২৪ বছর। এই তথ্য সত্যতা যাচাই করার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়া হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে যে, সাভানা অ্যাগ্রোর মালিকানা অতিক্রমকারী হিসেবে বেনজীর আহমেদ এবং তাঁর পরিবারের প্রাপ্তি হয়েছে কয়েক শ কোটি টাকা এবং ব্যবসা।
বেনজীর আহমেদের পরিবারের অন্য একটি প্রতিষ্ঠান হলো সাভানা ন্যাচারাল পার্ক প্রাইভেট লিমিটেড। রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কম্পানিস (আরজেএসসি) তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে, এই কম্পানির অনুমোদিত মূলধন পাঁচ কোটি টাকা। সাভানা অ্যাগ্রোর মতো এই কম্পানির মালিকানাও আছে স্ত্রী এবং দুই মেয়ের। এখানেও স্ত্রী চেয়ারম্যান এবং মেয়েদের একজন এমডি, অন্যজন পরিচালক হিসেবে কর্ম করছেন। প্রত্যেকের হাতে রয়েছে এক লাখ করে মোট তিন লাখ শেয়ার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে, এই পার্কের আয়তন প্রায় ৬০০ বিঘা। পার্কটি বড় করতে পাশে আরো ৮০০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে। এখন তা ভরাট করা হচ্ছে।
যৌথ মূলধনী কম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে পাওয়া নথির অনুসারে, সাভানা অ্যাগ্রোর নিবন্ধনে ঠিকানা হিসেবে দেওয়া হয়েছে ঢাকার শেখপাড়া রোড, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর ২২৮/৩ নম্বর। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে, ঠিকানাটি বেনজীরের শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা। বেনজীরের শ্বশুরের নাম হলো মীর্জা মনসুর উল হক এবং শাশুড়ির নাম লুত্ফুন নেসা মনসুর।
তথ্য অনুযায়ী, বেনজীরের স্ত্রী জীশান মীর্জারের জন্ম হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ১০ জুলাই। তার বড় মেয়ের জন্ম হয়েছিল ১৯৯৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে। ছোট মেয়ের জন্ম হয়েছিল ২০০০ সালের ১২ এপ্রিলে। দুই মেয়ে মাত্র ২৯ ও ২৪ বছর বয়সেই প্রভাবশালী পুলিশকর্তা বাবার অবৈধ আয়ের ওপর ভর করে কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার স্ত্রী জীশান মীর্জারও বৈধ আয়ের কোনো উৎসর মধ্যে নেই, তবে সেও বিপুল বিনিয়োগে গড়ে তোলা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হওয়ার মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছেন। জীশান মীর্জার পুরোপুরি পৈতৃক সূত্রে এত পরিমাণ সম্পদ অর্জন করা সম্ভব নয়। বড় মেয়ে ফারহিন রিসতা বিনতে বেনজীর এমডি হওয়ার সময় হয়েছিল ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বরে, তবে এখনো ছোট মেয়ের বিয়ে হয়নি। বড় মেয়ের বিয়ের প্রায় ১২ বছর আগে থেকেই বেনজীর কম্পানিগুলোর জন্য জমি কেনা শুরু করেন এবং মেয়েকে কম্পানির এমডি বানান।
সরেজমিনে বেনজীরের রিসোর্ট:
সরেজমিনের অনুসন্ধান দল গোপালগঞ্জে পৌঁছেছে, বেনজীরের সম্পদ খোঁজার লক্ষ্যে। এখানে পৌরাণিকভাবে পরিচিত সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কটিকে স্থানীয়রা 'বেনজীরের চক' নামে চিহ্নিত করেন। স্থানীয় পুলিশ অধিদর্শক এবং র্যাবের ডিজি অলস নয়, তারা প্রায় এক হাজার ৪০০ বিঘা জমি কেনে এই রিসোর্টটি উত্তরাধিকারী হিসেবে অবস্থান করেছেন। জমির ক্রয়মূল্য বিঘাপ্রতি তিন থেকে আট লাখ টাকা ছিল।
জমিগুলো ক্রয় করার পর বেনজীর রিসোর্টে অনেকটা ভরাট করেছেন। এই জমিগুলো পূর্বে বন্ধ জলাশয় ছিল, এখানে একটি মাছের অভয়ারণ্য ছিল। এবং এখানে অনেকগুলি কটেজ এবং অনেকগুলি পূর্বে ছিল বাসার বিকল্প।
সরেজমিনের অনুসন্ধানে প্রকাশ হয়েছে, সাভানা রিসোর্টে এখন ১৫টি কটেজ সক্রিয় আছে এবং এগুলি পর্যটকদের ভাড়া দেওয়ার জন্য উপলব্ধ। আমন্ত্রিত মেহমানদের জন্য এই কটেজগুলির ভাড়া প্রতি দিন সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে ৫,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা এবং রাতের ভাড়া প্রতি রাতে ১০,০০০ টাকা অথবা রাতে বিকেলের ভাড়ার দামে যেমনটি দর্শানো হয়েছে, সেই মূল্যে পান। এছাড়াও, কাপলদের জন্য বিশেষ ছাড়ও প্রযোজ্য। রিসোর্টে চাকরির জন্য আবেদনকারীদের জন্য কোনও বয়সের প্রতিবন্ধক নেই। এছাড়াও, চাইলে তারা রাত কাটাতে পারেন। বেনজীর এই প্রতিষ্ঠানটির নির্দেশিকা থাইল্যান্ড এবং পশ্চিমাঞ্চলের প্রশাসনিক বিশ্বের অভিজ্ঞ প্রশাসকদের সাথে কাজ করা।
পূর্বের অনুসন্ধান অনুযায়ী, বেনজীর জমি কেনার পর প্রায় ১৫ ফুট পর্যন্ত রিসোর্ট নির্মাণ করা হয়েছিল, যেখানে আবার বন্ধ জলাশয় ছিল। এখন এই রিসোর্টে প্রবেশ সহজ করতে সরকারী খরচে সাত কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও, রিসোর্টের ভেতরে সব রাস্তা পিচ ঢালাই করা হয়েছে।
স্থানীয় অধিবাসী জানান, বেনজীরের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের সব রাস্তা একে অপরের সঙ্গে সারাক্ষণ করা হয়েছে সরকারি খরচে।
স্থানীয় ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান বলেন, "বেনজীর আহমেদ এটিকে দেশের সবচেয়ে বড় ইকোপার্ক এবং বিলাসবহুল রিসোর্টের পরিকল্পনা মাথায় নিয়েছেন। এর জন্য যা যা প্রয়োজন, সে সব করা হচ্ছে।"
বেনজীরের কিনা জমিতে কিছু মালিক নাম প্রকাশ না করে বলেন, তাঁরা ধৈর্যশীল ছিলেন বিভিন্ন চাপ ও ভয়ভীতির সম্মুখীন হতে। তারা প্রায় সব জমি বিক্রি করার জন্য অত্যাচারের মুখোমুখি হতেন। যদি ভয়ভীতি না করা হত, তাদের জমি অনুপ্রবেশ করতেন। তারপরে মাটির ওপর দিয়ে নিয়ে যেতেন। শেষ পর্যন্ত জমি বিক্রি করার জন্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করতে পারছিলেন না।
ঢাকা ও পূর্বাচলে বিপুল টাকার সম্পদ
গুলশানে বেনজীর আহমেদের প্রয়াত একটি লাভজনক অ্যাপার্টমেন্ট অবস্থিত যা পরিচিত র্যাংকন আইকন টাওয়ার লেক ভিউ নামে পরিচিত। এই অ্যাপার্টমেন্টের ১২ এবং ১৩ তলায় বেনজীর আহমেদের অপরিসীম বিলাসবহুল আবাসিক স্পেস পাওয়া যায়। এর সাথে মিলিত অ্যাপার্টমেন্টের প্রতি ফ্লোরে প্রায় ৮,৬০০ বর্গফুটের ব্যবহারযোগ্য পরিসর রয়েছে।
এই ভবনটি প্রতিষ্ঠান র্যাংকন ডেভেলপমেন্টস দ্বারা নির্মিত হয়েছে, যা একটি প্রজাতন্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রের সার্বজনীন উন্নয়ন সংস্থার সাথে সম্প্রতি বিতরণ করেছে। এই অবকাঠামোটি প্রতিটি আবাসিক এবং বাণিজ্যিক অপশনের জন্য আদর্শ পরিবেশ সরবরাহ করে। ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বশীল স্থানীয় কর্মী মো. সবুজ অত্র অ্যাপার্টমেন্টগুলির সঠিকতা নিশ্চিত করেন।
রাজধানীর মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালের সাথে যুক্ত ইস্টার্ন প্রপ্রার্টিজে বসবাস করা একটি বহুতল ভবনে বেনজীর আহমেদ চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছেন।
বেনজীর আহমেদ পূর্বে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা খরচ করেছেন এবং আনন্দ হাউজিং সোসাইটির দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার মোড়ের পাশে অন্তত ৪০ কাঠা জমি উপর বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুসারে, এই এলাকার ডুব ও বিল হিসেবে পরিচিত এবং মাছ ধরার জন্য পরিচিত। বেনজীর আহমেদ পুলিশের আবাসিক এলাকা হিসেবে উঠে এবং তার নির্মাণ কাজ জারি রেখেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে, আনন্দ হাউজিং এর সংলগ্ন এলাকায় মো. শহিদুল ইসলাম অটো চালান চালিয়ে আসছেন। তাঁর মতে, সোসাইটির মধ্যে এটি সবচেয়ে মানুষের জন্য দামি বাড়ি। হাউজিংটি এখনো পূর্ণরূপে তৈরি হয়নি, তবে বেনজীরের ডুপ্লেক্স বাড়িটি দেখতে গিয়ে মাঝেমধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য ভিড় গঠিত হয়ে থাকে।
রাজধানীর পূর্বাচলের ফারুক মার্কেটের পেছনের দিকে, ১৭ নম্বর সেক্টরের ৩০১ নম্বর রোডের জি ব্লকে ১০ নম্বর প্লটের মালিক পুলিশের সাবেক আইজি ছিলেন। স্থানীয় জনগণ জানিয়েছেন, এই প্লটের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২২ কোটি টাকা। বেনজীর আহমেদ পুলিশের আইজি ছিলেন এবং এই প্লটটি কিনেছিলেন। তবে, বিশ্বস্ত সূত্রের অনুসারে, এই প্লটটি তিনি বিক্রির পরিকল্পনা করেছিলেন। কিছু ক্রেতার সাথে আলোচনা চলছে এবং ওই এলাকার মোহাম্মদ নাঈম, আব্দুল কাদের ও মোহাম্মদ মোহসিন নামের তিন ব্যক্তি পুলিশের সাবেক আইজির এই বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
রূপগঞ্জের নাওড়ায়, নারায়ণগঞ্জের এক নির্দিষ্ট অঞ্চলে, বেনজীর আহমেদের দুটি বিঘা জমি রয়েছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
বেনজীরের দুর্নীতির সম্পর্কে জানতে চাইলে, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, "আইন সমস্তের জন্য সমান। যদি কেউ স্বীকৃত আয়বহির্ভূত সম্পত্তি অর্জন করে, তবে তার বিরুদ্ধে উচ্চতর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বেনজীর আহমেদ পূর্বে পুলিশের এক প্রভাবশালী অফিসার ছিলেন। সংক্ষেপে এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, এমন কোনো আইন নেই যা বিশেষভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বা সাবেক মন্ত্রিকে প্রভাবিত করে। সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীও আইনের অধীনে দুর্নীতি অবলম্বন করতেন। সুতরাং, যদি কেউ দুর্নীতির সন্দেহে পড়ে, তাহলে তা প্রশ্ন উঠাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তির অপব্যবহারের বিষয়ে, দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক প্রকাশ করেছেন যে, যদি সঠিক প্রমাণ ও তথ্য উপলব্ধ হয় বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে, তবে অবশ্যই প্রধান অনুসন্ধান করা হবে। তারপরেও, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথার্থ সাপোর্টিং পেপারস প্রয়োজন।
একাধিক বার যোগাযোগ করা হয়েছে বেনজীর আহমেদের সাথে অভিযোগের বিষয়ে, তবে তিনি কোন উত্তর দেননি। পরে তিনি নিজে প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনা করার জন্য বার্তা পাঠান।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"