বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) এর নতুন নিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন যে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীম...
বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) এর নতুন নিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন যে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এখন বিজিবির পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা আর কোনো নতুন করে রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেবে না।
বিজিবির নতুন মহাপরিচালক মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে এবং বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদনের শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, গতকাল দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সবচেয়ে বেশি এই সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আমি আবেগে আছি। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আমি নিজে সরেজমিনে সীমান্ত পরিদর্শনে যাচ্ছি। আমরা ধৈর্যধারণ করে, মানবিক দিক বিবেচনা করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সেরকমই। গতকাল প্রধানমন্ত্রী এব্যাপারে কথাও বলেছেন, ধৈর্যধারণের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।
বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, গতকাল রাতে পর্যন্ত ১১৫ জন বিজিপি সদস্য আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বা আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ সকালে আরও ১১৪ জন যুক্ত হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত এই সংখ্যা ২২৯ জন ছিল। দুপুরের পর আরো বিজিপিসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর ৩৫ জন যোগ হয়ে ২৬৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের জন্য আমরা খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এর মধ্যে ১৫ জন আহত ছিলেন, যার মধ্যে ৮ জন গুরুতর আহত ছিলেন। এই ৮ জনের মধ্যে ৪ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, এবং বাকি ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সীমান্তে উত্তপ্ত অবস্থায় সরকারি পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিভিন্ন স্তরের সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ করছে। আশ্রিতদের প্রত্যাবর্তন বা ফেরানোর সমস্যার সমাধানের দিকে কাজ চলছে। মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছে। তাদের প্রত্যাবর্তন নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে এবং আশা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই এটি সম্পন্ন হবে।
বিজিবি ডিজি বলেন, একই সঙ্গে দুই দেশের দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। সীমান্তবর্তী অবস্থা আপনাদের জ্ঞাত। মিয়ানমারে গোলাগুলির মধ্যে কিছু শেল বাংলাদেশে পড়েছে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, গতকাল একজন রোহিঙ্গা নাগরিক এবং একজন বাংলাদেশী নারী মারা গেছেন। এই মৃত্যু কখনোই আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক নয়। আমরা প্রতিক্রিয়া দেয়ার মাধ্যমে প্রত্যাবর্তনের দাবিতে আসছি। আমরা এখানে একটি প্রতিষ্ঠানিক মিটিং করেছি এবং আমরা বারবার বলছি আজকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি গুরুতর মতবিনিময় হয়েছে। আমি আগামীকাল সরেজমিন করে সীমান্ত অবস্থা নজর রাখব।
তিনি বলেন, আজকে মিয়ানমারের ডিএ (ডিফেন্স অ্যাটাচ) আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সব দিকে অ্যাঙ্গেজ করে কীভাবে এর তাৎক্ষণিক সমাধান করা সম্ভব, সে চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আজকে ৬৫ জন রোহিঙ্গা নৌকা দিয়ে নদীর মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। আমাদের টেকনাফ বিজিবি তাদের আটক করেছে। তাদের পুনরায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে। আমরা নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আবার প্রবেশ করতে দিব না। এভাবে আমরা বাংলাদেশের অখণ্ডতা সংরক্ষণ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অনুযায়ী কাজ করছি। সীমান্তের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা অবস্থা এখনো বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
সবার আগে পেতে Follow করুন:
" আঁধার আলো নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে"